Sarera maiden voyage
বন্দরে আবার লাল-সবুজ পতাকার কন্টেইনার জাহাজ
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: প্রায় এক দশক পর আজ রবিবার বন্দর জেটিতে নোঙর ফেললো বাংলাদেশ পতাকাবাহী কন্টেইনার জাহাজ । মঙ্গলবার থেকে যাত্রা শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ এক্সপ্রেস সার্ভিসের। চট্টগ্রাম-সিঙাপুর-পোর্ট কেলাং পথে।
সকাল সাড়ে ১১ টায় কর্ণফুলী গ্রুপের কন্টেইনার জাহাজ সারেরা ভিড়েছে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল( এনসিটি )-৪ এ। এরমধ্যে দিয়ে বিদেশি মালিকানাধীন শিপিং কোম্পানির একচেটিয়া আধিপত্যের অবসান হলো বাংলাদেশের কন্টেইনার পণ্য পরিবহনের।
কর্ণফুলী গ্রুপ বাংলাদেশ এক্সপ্রেস সার্ভিসে দু’টি কন্টেইনার জাহাজ যুক্ত করেছে। জাহাজ দু’টির নাম ‘সারেরা’ ও ‘সাহারে’। দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজ হিসেবে সারেরা অগ্রাধিকার সুবিধায় এসে নোঙর করেছে বলে জানিয়েছেন বন্দরের ট্রাফিক শাখার কর্মকর্তারা। আরও জানান, কন্টেইনার তোলার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় চেয়েছে বন্দরের কাছে।
মঙ্গলবার দিনের জোয়ারে সারেরার প্রথম সমুদ্রযাত্রা শুরু হবে কন্টেইনার নিয়ে।
সারেরা ও সাহারের প্রতিটির পরিবহন ক্ষমতা ১৫৫০ টিইউস করে। সারেরা প্রথম যাত্রাতে প্রায় ১৪০০ টিইউস কন্টেইনার নিয়ে যাচ্ছে। জাহাজটি এনসিটিতে নোঙর ফেলার পর প্রস্তুতি সম্পন্ন করে কন্টেইনার উঠানো শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন টার্মিনাল অপারেটর সাইফপাওয়ারটেক লিমিটেডের কর্মকর্তারা। জাহাজটির জন্য বুকড কন্টেইনার নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শিপমেন্ট হয়ে যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
কর্ণফুলী গ্রুপের পরিচালক হামদান হোসাইন চৌধুরী বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধিকে বলেন, ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে সমুদ্রবাণিজ্যে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে আবারও। ‘সারেরা’ ও ‘সাহারে’ চট্টগ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে পোর্ট কেলাং নিয়ে যাবে রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনার। ফিরতি যাত্রায় একই পথে নিয়ে আসবে আমদানি পণ্যের কন্টেইনার। তিনি আশা করেন যে এই রুটে তাদের বাণিজ্য সফল হবে এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্য রুটেও সম্প্রসারিত হবে তাদের বাণিজ্য।
বন্দরের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি মালিকানাধীন ৮৪টি কন্টেইনার জাহাজ চলাচল করে। ২২ ফিডার অপারেটর পরিচালনা করে এসব জাহাজ। সিঙাপুর, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা এবং চিনের বন্দরে পণ্য আনা-নেয়া করে জাহাজগুলো। নতুন সংযোজিত বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ দু’টি বার্থংয়ে অগ্রাধিকার সুবিধা পাওয়ায় বিশেষতঃ তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পতাকাবাহী কন্টেইনার জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায় ২০১০ সালে এইচআরসি শিপিং কোম্পানির তা থেকে সরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। তাদের মালিকানায় ১০টি কন্টেইনার জাহাজ ছিল। তার আগে ২০০৭ সালে বন্ধ হয়ে যায় কিউসি শিপিং-এর জাহাজ। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনেরও ছিল কন্টেইনার জাহাজ। বাংলার শিখা ও বাংলার রবি এই দু’টি ছিল তাদের। কিউসি শিপিং ৭টি জাহাজ পরিচালনা করলেও কেবল দু’টি ছিল বাংলাদেশ পতাকাবাহী। বাংলাদেশ ফ্ল্যাগ ভেসেল অর্ডিনেন্স-এর আওতায় বিএসসির জাহাজগুলো অগ্রাধিকার সুবিধা পেলেও ব্যক্তি মালিকানাধীন দেশীয় পতাকার জাহাজগুলো সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। তাই কিউসি তাদের অন্য জাহাজগুলো আর দেশীয় পতাকায় নিয়ে আসেনি। তাদের দেশীয় পতাকার জাহাজ কিউসি টিল এবং কিউসি পিন্টেইল বন্ধ হয়ে যায় ২০০৭ সালে।